সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ২২:১৫
হাওযা ইলমিয়া নাহজুল বালাগা থেকে আজকের পরিচয় ব্যাখ্যা করুক

আয়াতুল্লাহ আ'রাফি ছাত্রদের বলেন: নাহজুল বালাগা সর্বদা ছাত্রদের হাতের নাগালে থাকা উচিত।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক তাঁর বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় নাহজুল বালাগায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যক্তিত্বের বহুমাত্রিক দিক তুলে ধরে বলেন: আমিরুল মুমিনিন আলী (আ.)-এর নাহজুল বালাগার বাণী একদিকে নবী করিম (সা.)-এর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক চরিত্রকে চিত্রিত করে, অন্যদিকে নবুওয়াতের যুগের সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রদান করে। এই দুইটি পরিপূরক অধ্যায় আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে: ব্যক্তিগত সংকল্প, পারিবারিক পবিত্রতা এবং ঐশী সংযোগের মাধ্যমে দুর্নীতি ও বস্তুবাদী শক্তির ঢেউ পরাস্ত করা সম্ভব।

আয়াতুল্লাহ আ'রাফি ছাত্রদের নাহজুল বালাগার প্রতি মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন:
নাহজুল বালাগা সর্বদা ছাত্রদের হাতের নাগালে থাকা উচিত। এটি শুধু গভীর ও উচ্চ জ্ঞানের ভাণ্ডার নয়; বরং এতে রয়েছে অনন্য সাহিত্যিক অলঙ্কার, বীরত্বের চেতনা, জিহাদি ও নৈতিক শিক্ষা। নাহজুল বালাগার বিশেষত্ব হলো—এখানে নৈতিকতা একীভূত হয়েছে ব্যবস্থাপনা, শাসন এমনকি যুদ্ধের সঙ্গে। তাই এর নৈতিকতা যেমন জ্ঞানতাত্ত্বিক, তেমনি প্রয়োগিকও।

হাওযা ইলমিয়ার উচ্চপরিষদের সদস্য এ দুটি অংশ বিশ্লেষণ করে যোগ করেন: একদিকে পারিবারিক শেকড়, শিক্ষা ও বংশ মানুষের চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে; অন্যদিকে সামাজিক ও পরিবেশগত অবস্থা প্রভাব ফেলে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো—কখনও কখনও পারিবারিক শেকড় ও ব্যক্তিগত সংকল্প এতটাই শক্তিশালী হয় যে তা সমাজের প্রতিকূল ঢেউকে নস্যাৎ করতে পারে। মহানবী (সা.) এ সত্যের উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি শুধু পরিবেশের দুর্নীতিতে প্রভাবিত হননি, বরং তাঁর সময়ের সমস্ত রাজনৈতিক ও সামাজিক সমীকরণকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

মহান নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির হাওযা ইলমিয়া সম্পর্কে বার্তা আসলে ভবিষ্যতের জন্য এক রোডম্যাপ। এই বার্তার অর্থ ত্রুটি অস্বীকার করা নয়; বরং এতে যেমন হাওযার সাফল্যগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি আমাদের দুর্বলতা ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ আ'রাফি ইসলামি বিপ্লবের পূর্ববর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের তুলনা টেনে বলেন:
ইরানি জাতির সামনে বিপ্লবের আগে তিনটি ভয়াবহ ঢেউ ছিল:
প্রথমত: বৈশ্বিক পর্যায়ে নাস্তিকতা ও ধর্ম থেকে দূরে সরে যাওয়ার ঢেউ।
দ্বিতীয়ত: ইসলামি বিশ্বে চিন্তা ও রাজনীতির পশ্চাদপদতার ঢেউ।
তৃতীয়ত: দেশে অভ্যন্তরীণ স্বৈরতন্ত্র ও পরনির্ভরতার ঢেউ।

এই অন্ধকারময় পরিস্থিতিতে ইমাম খোমেইনি (রহ.) উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। বস্তুগত শক্তির ওপর নির্ভর না করে, ঐশী সংকল্প ও গভীর জ্ঞানের মাধ্যমে তিনি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন। এটাই সেই আদর্শ যা নাহজুল বালাগায় নবী করিম (সা.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে; অর্থাৎ ঈমান, সংকল্প ও ঐশী সংযোগের মাধ্যমে শূন্য থেকে মহত্ত্ব নির্মাণ।

দেশের হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক আরও বলেন: আজও হাওযা ইলমিয়্যা এ বার্তাটি অনুধাবন করবে যে, কখনও হতাশ হওয়া চলবে না। ব্যক্তিত্ব, সংকল্প ও জ্ঞান শক্তির সমীকরণকে পরিবর্তন করতে পারে। এই ঐশী নিয়ম ইতিহাসে বারবার পুনরাবৃত্ত হয়েছে এবং ইসলামি বিপ্লবের মধ্যেও তা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha